চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের হেনস্তা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঢাকা-আরিচা
মহাসড়কের নবীনগর থেকে কালামপুর পর্যন্ত লেগুনা থেকে মাসিক চাঁদা উত্তোলনের
বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় স্থানীয় সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়
সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই রুটে চলাচলকারী ফিটনেসবিহীন লেগুনাগুলোর কাছ থেকে
মাসিক ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয়
কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে প্রতি মাসে স্টিকার বিক্রির মাধ্যমে লক্ষাধিক
টাকা চাঁদা তোলা হতো বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি
বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে চাঁদাবাজির এই বিষয়টি প্রকাশিত হলে চক্রটি ক্ষিপ্ত
হয়ে ওঠে। এরপর থেকেই সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের বিভিন্ন অচেনা নাম্বার থেকে ফোন করে
ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একাধিক
সাংবাদিক জানিয়েছেন, তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি কিছু কুচক্রী মহল তাদের
বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ারও চেষ্টা করছে।
গাড়ির মালিক
পক্ষের এক ব্যক্তি মোঃ লোকমান হোসেন সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে মুঠোফোনে বলেন,
“সাংবাদিকরা যদি ৩০ মিনিটের মধ্যে লেগুনার বিষয়ে বসে না, তাহলে যারা এই লেগুনার বিরুদ্ধে নিউজ করেছে তাদের অবস্থা খারাপ হবে। এই
লাইনে আমার সুমুন্ধি (মোঃ সামীম খান)-এর নামে আগে তিনটি গাড়ি চলতো। ৫ তারিখের আগে
এই গাড়িগুলো থেকে মাসিক টাকা দেওয়া হতো, এখন আর চাঁদা
দেওয়া হয় না।”
সাংবাদিকদের
হাতে থাকা কলরেকর্ডেও এই হুমকির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে
জানা যায়, এই লাইনে প্রায়
৯৫টি লেগুনা থেকে মাসিক চাঁদা তোলা হয়। এদিকে, সাংবাদিকদের
প্রকাশিত প্রতিবেদনের জবাবে চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতা বাবলু টাকার বিনিময়ে কিছু
ভুয়া সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের মানহানি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন
বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই কাজে তাকে
সহায়তা করছে সাংবাদিক পরিচয়দানকারী পলাশবাড়ীর বিপ্লব খান। বিপ্লব খান “একুশে নিউজ”
অনলাইন পোর্টালে গত ১৫ অক্টোবর “ধামরাইয়ে পরিবহন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি, না পেয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের
অভিযোগে প্রতিবাদ” শিরোনামে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তবে সংবাদটির
তথ্যগত অসত্যতা প্রকাশ পাওয়ায় সেটি পরবর্তীতে পোর্টাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এই বিষয়ে
সাভার ট্রাফিক ইনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিন (T.I Admin) মোঃ ছালাম বলেন,
“আমরা লেগুনাগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছি। নবীনগর বর্তমানে যানজটমুক্ত
আছে। এর বাইরে আমাদের করার তেমন কিছু নেই।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে নবীনগর-কালামপুর রোডে
চলাচলকারী লেগুনা চালক ও যাত্রীরা চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কারণে ভোগান্তিতে রয়েছেন।
সাংবাদিকদের সাহসী প্রতিবেদন প্রকাশের পরও তাদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায়
সাংবাদিক সমাজ ও সাধারণ মানুষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
No comments