Breaking News:
লোড হচ্ছে...

হাইওয়েতে বাবলুর ‘বাঘ-শাপলা’ স্টিকার ব্যবসা: চাঁদা দিয়ে মিলছে চলাচলের অনুমতি


সোলায়মান হোসাইন,  স্টাফ রিপোর্টার:

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর থেকে কালামপুর হয়ে সাটুরিয়া পর্যন্ত প্রতিদিনই অবাধে চলাচল করছে অসংখ্য ফিটনেসবিহীন লেগুনা গাড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ—এই যানবাহনগুলো রাস্তায় চলার অযোগ্য হলেও প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে যাত্রীবাহী এই বিপজ্জনক পরিবহন। এতে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, বাড়ছে জনদুর্ভোগ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসব লেগুনার অধিকাংশেরই নেই বৈধ ফিটনেস, আর অনেক চালকেরও নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। তবুও মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে এই লেগুনাগুলো। স্থানীয়দের দাবি, এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল মাসিক চাঁদার বিনিময়ে এসব অবৈধ গাড়িকে রাস্তায় চলাচলের সুযোগ দিচ্ছে।

তদন্তে জানা গেছে, বাবলু নামের কথিত মালিক এই চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতা। প্রতিটি গাড়ি থেকে মাসিক দুই হাজার টাকা করে তোলা হয় বলে জানা যায়। নবীনগর-কালামপুর রুটে চলাচলকারী প্রায় ৪০টি লেগুনা থেকে এই টাকা সংগ্রহ করা হয়। চাঁদার বিনিময়ে চালকদের হাতে দেওয়া হয় একটি বিশেষ স্টিকার, যার প্রতীক কখনো “বাঘ”, কখনো “শাপলা”—যা থাকলে পুলিশও আর বাধা দেয় না।

একজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,  “টাকা না দিলে গাড়ি চলে না ভাই। টাকা দিলেই স্টিকার পাই, আর ওই স্টিকার থাকলে কেউ কিছু বলে না। বাবলু ভাই টাকাটা নেন, তিনিই সব দেখেন। টাকা দিলে তিনিই আমাদের স্টিকার দেন”

প্রত্যেকটি গাড়ি বাস্তবে পার্কিং করছে কালামপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে মহাসড়কের লোকাল লেনে, ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট ও জনদুর্ভোগ।

এই রুটের কথিত মালিক বাবলুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আপনারা যা পারেন, তা করেন। আমার গাড়ি রাস্তায় চলবেই।

এ বিষয়ে গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কৌশিক আহমেদ বলেন, “আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। ফিটনেসবিহীন লেগুনা এবং অবৈধ স্টিকার ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নবীনগর উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ জুলহাস বলেন, “আমরা বিষয়টি নজরে এনেছি। ফিটনেসবিহীন বা অবৈধভাবে চলাচলকারী কোনো যানবাহনকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে যাতে দুর্ঘটনা কমে এবং মহাসড়ক সুষ্ঠুভাবে চলাচলযোগ্য থাকে।”

স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত অভিযান চালু হলে এই চাঁদাবাজ চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে। তাতে শুধু দুর্ঘটনা কমবে না, যাত্রীদের ভোগান্তিও অনেকটা লাঘব হবে।

No comments